
আনোয়ার হোসেন, শ্রীপুর প্রতিনিধিঃ-
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের আমতলী এলাকায় স্মরণ কালের সবচেয়ে বড় নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাখো জনতার উপস্থিতিতে নির্বাচনী সমাবেশ রূপ নেয় জনসমুদ্রে। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশ স্থল। নৌকা প্রতীক এবং রুমানা আলী টুসি’র ছবি সহ প্লেকার্ড নিয়ে মিছিলের পর মিছিল নিয়ে মানুষের ঢল নামতে থাকে। ব্যান্ড পার্টির বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নৃত্য প্রদর্শন এবং নৌকা মার্কায় ভোটের শ্লোগান দিতে দেখা যায়। শ্রীপুরের মাটিতে এতো বিপুলসংখ্যক জনতার উপস্থিতি ইতিপূর্বে দেখা যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার ছিলো নির্বাচনী সমাবেশের শেষ দিন। আগামীকাল সকাল ৮ টার পর সকল প্রচার প্রচারণা বন্ধ থাকবে। শেষ দিনের নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসাবে আজ শ্রীপুরের আমতলী এলাকায় আয়োজিত সমাবেশের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি। আরও উপস্থিত ছিলেন মরহুম আলহাজ্ব এডভোকেট রহমত আলীর স্ত্রী এবং রুমানা আলী টুসি’র মা নাদেরা আলী এবং রুমানা আলী টুসি’র বড় ভাই গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয় সহ তাঁর স্বামী সন্তান এবং পরিবারের একাধিক সদস্য।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয় স্বতন্ত্র প্রার্থী সবুজের উদ্দেশ্যে বলেন, শ্রীপুরের মানুষ বুঝে গেছে আপনার পেট শ্রীপুরের মানচিত্রের চেয়েও বড়। সেই পেট আরও বড় করার জন্য আপনাকে আর ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেনা। তিনি বলেন, নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য দিয়েছেন আপনার স্ত্রী ২০১৮ সালে ছিলেন গৃহিনী এখন তিনি হয়েছেন ব্যবসায়ী। পাঁচ বছরে আপনার স্ত্রী গৃহিণী থেকে ব্যবসায়ী হয়েছেন। অথচ আমার পিতা ৩০ বছর এমপি ছিলেন, ৩০ বছরেও আমার মা গৃহিণীই রয়ে গেছেন। ৫ বছরে আপনার স্ত্রীর সোনা বেড়েছে ১০০ ভরি, অথচ ৩০ বছর পরেও আমার মায়ের সোনার পরিমাণ ৬ ভরি। এই হলো আপনার সাথে আমাদের পার্থক্য। তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সবুজের পিতা মরহুম ইসমাঈল হোসেন বাগমার ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধীদের একজন। আলবদর বাহিনীকে তার বাড়ীতে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন। উপস্থিত জনতাকে নৌকে প্রতীকে ভোট দিয়ে তার বোন রুমানা আলী টুসিকে বিজয়ী করার আহবান জানান। এসময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে যান, তার কথা শুনে উপস্থিত জনতাকেও চোখ মুছতে দেখা গেছে।
অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি লাখো জনতার উপস্থিতিতে সমাবেশকে জনসমূদ্রে পরিণত করার জন্য উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি তাঁর বাবার মতো তাকেও ভালোবাসার জন্য আকুতি প্রকাশ করেন উপস্থিত জনতার প্রতি। তিনি এ সময় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়েন, এ জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন বক্তব্য না দিতে পারার জন্য। এসময় এক বেদনা বিধুর পরিবেশে আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো জন সমাবেশ।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিসুর রহমান, মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা জি এস নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম সজিব, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান সিরাজ, জেলা ছাত্রলীগের সাঃ সম্পাদক নাসির মোড়ল সহ আরও অনেকে। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন কেন্দ্র কমিটির নেতাকর্মীরা।
লাখো জনতার উপস্থিতির এই নির্বাচনী সমাবেশের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের সাবেক ভি পি এবং আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ্।